Monday, September 27, 2010

fortune cookies

* A friend asks only for your time not your mone *

*you are the center of every group's attention*

*a thrilling time is in your immediate future*

*you have a yearning for perfection *

Tuesday, October 20, 2009

সাকিব দ্যা টারমিনেটর

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই একটা করে পোস্টার দেখি আর ভেতরে ভেতরে কুরকুর করতে থাকে, মনে হয়, নিজেও কিছু একটা বানাবো, কিন্তু মাথায় কিছু আসে না, তাই আর বানানো হয় নি এ পর্যন্ত কিছু। কিন্তু আজকের খেলার ফলাফল দেখে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না, লেগে পরলাম কাজে। প্রথমে ভেবেছিলাম বাংলায় বানাবো, কিন্তু ফটোশপে বাংলা লিখতে না পারায় সে কাজে ইস্তফা দিয়ে ইংরেজীতেই লেগে পড়লাম। আশা করি আমার মত ভুদাই এর এই অপরিণত প্রচেষ্টা সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

বাংলাদেশের ৮ উইকেটে ৩২০ রান করতে দেখে যত না দাঁত বের হয়েছে, অথবা ৪৯ রানের বিজয় না যত বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তার চেয়েও ব্যাপক মজা পেয়েছি সাকিব এর ৬৪ বলে ১০৪ রান, যা আমার ধারনা বাংলাদেশী কোন ব্যাটসম্যানের করা দ্রুততম শতক, যেখানে ৯ টি চার এবং ৪ টি ছক্কার উপহার দিয়েছেন সাকিব আমাদের এবং জিম্বাবুয়ের বোলারদের চোখ টিপি দেঁতো হাসি. এরকম স্কোর দেখে একটাই কথা মনে এসেছে বার বার, কোপা শামসু, কোপা।

সাকিব দ্যা টারমিনেটর


শিবিরের কুকর্মনামা

গত কয়েকদিন ধরে সচল বেশ গরম, আর তার জন্যে আমি কাউকে দোষ ও দেই না। তাই অপেক্ষা করলাম দুইদিন এ লেখাটা দেওয়ার জন্যে। আমি এখন পর্যন্ত শিবিরের নামে কোন ভালো কথা শুনিনি, আর কেউ যদি বলতেও আসেন, তাকে হয়ত খুব খারাপ ভাষায় আক্রমন করব, কিন্তু এমন হল কিভাবে, আমার বয়স ৩০ বছর, কাজেই আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ আমি নিজে দেখিনি, বাবা চাচার কাছে গল্প শুনেছি, আমাদের পরিবারের কেউ শহীদ হননি মুক্তিযুদ্ধে, কিন্তু তারপরেও কেন আমি শিবির নামে এই মগজ ধোলাইকৃত ফ্যানাটিক দলের নাম শুনলে ঘৃনায় নাক কুঁচকাই, কেন জান হাতে নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ি এদের বিরুদ্ধে, আমাকে তো কেউ আঘাত করে নি বা তাদের দলে ভেড়ানোর ও চেষ্টা করেনি। আমাদের প্রায় সকল কথাই একপেশে ধরনের হয়, কিন্তু আমি আমার কথা বলব, ভুল কিছু বললে আপনারা তো আছেনই শুধরিয়ে দেবার জন্যে।
[আমার লেখা এবং ভাষার ব্যবহারে সংবেদনশীলতার অভাব থাকলে আপনারা নিজগুনে ক্ষমা করে দেবার চেষ্টা করবেন, আমি চেষ্টা করব আমার লাগাম টেনে রাখার, কতটুকু পারব, ঠিক জানি না]

১।উইলো ভাই
আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেনীতে পড়ি, প্রতি সন্ধায় পরতে বসা বাধ্যতামূলক, যদি না কারেন্ট চলে যায়। তখন রাজশাহীতে থাকতাম। সপ্তাহে ২-১ দিনতো যাবেই কারেন্ট আর নেমে আসবে ফাঁকিবাজীর সুযোগ, এভাবে চলে যাচ্ছিল সুখের দিন, হঠাৎ দেখি একদিন এক লম্বা চওড়া খোঁচা খোঁচা দাড়িওয়ালা যুবক এসে হাজির, তার সকল কথাই কেমন যেন অসাধারণ লাগে, কিছুক্ষনের মাঝেই জানতে পারলাম ইনার নাম উইলো ভাই, সদ্য পাস করে বের হয়েছেন, পেশায় প্রকৌশলী, তিনি নিজে কিছু করবেন, নিজেই নিজের বস হবেন, তার নানা রকমের প্রজেক্টের মাঝে চার্জার লাইট অন্যতম, ২০” টিউবলাইটের বাল্ব দিয়ে উনার নিজের বানানো চার্জ লাইট লাগিয়ে দিয়ে গেলেন বাসায়। আমার সে কী উত্তেজনা, সেই সাথে মনো কিছুটা খারাপ হল যে, কারেন্ট তো আর যাবে না। কিন্তু তার পরেও চার্জারবাতি জ্বলবে, এই উত্তেজনায় অস্থির, কখন কারেন্ট যাবে! তার পরের বছরের ঘটনা, শুনলাম, উইলো ভাই নাকি হাসপাতালে, ছোট বলে কেউ আমাকে আর কিছু বলতে চায় না। কিন্তু আমার বড় ভাইয়ের কাছ থেকে উদ্ধার করলাম, উনি নাকি ছাত্র মৈত্রী করতেন, একরাতে বাসায় ফেরার সময় শিবিরের কিছু লোক তাকে একা পেইয়ে তাকে আঘাত করে, এই অসভ্য ফ্যানাটিকের তাকে অনেক মারে, তারপরেও যখন আর পেট ভরে না, তখন তার ডান হাত ফেড়ে ফেলে কনুই পর্যন্ত, তারপর তাকে বলে, যা এখন দেশের উন্নতি কর গিয়া পারলে। উনি হাসপাতালে ছিলেন মাসখানেক, তার ডান হাত দুইভাগ করে ফেলায় তা অপারেশন করেও কিছু করা যায়নি। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে, তার জন্যে একজনকে সারাজীবনের মত বিকল করে দেওয়ার মাধ্যমে দেশের কী উন্নতি সাধন হল, এটা আমার ছোট মাথার ছোট বুদ্ধিতে কোনভাবেই ঢুকল না। কাজেই আমার রাজনৈতিক চেতনা হবার আগেই আমি বুঝলাম, শিবির আর যাই হোক ভালো কিছু অবশ্যই না।

২। ডঃ রতন
আমার বয়স তখন ১০ বছর, আমি গভঃ ল্যাবে পঞ্চম শ্রেনীতে পড়ি, আমাদের মিড টার্ম পরীক্ষা চলছে, আমি পরীক্ষা দিয়ে বের হই, আপনারা যারা রাজশাহী গেছেন, তারা জানেন যে, লক্ষিপুর মোড়ে স্কুলটা, আর তখন থাকি মেডিকেল ক্যাম্পাসে। বাসায় যাবো, কিন্তু কোন রিকশাওয়ালাই যাবে না। ৩য় জন বল্ল, ঐখানে তো অনেক গন্ডগোল হয়েছে, ঐদিকে যাওয়া যাবে না। শুনেই আমার অজানা আশংকায় বুকটা কেঁপে উঠে দুরুদুরু। কেউ যখন যাবে না, তখন আর উপায় কী? হাঁটা শুরু করি আমরা দুই ভাই। আমার বাবার চেম্বার ও পথেই পড়ে, কাজেই চেম্বারের সামনে এসে চেম্বারের পিওনকে জিজ্ঞেস করি, কী ব্যাপার? এর মাঝে দেখি গেট আর গ্যারাজের সামনে টুকরা টুকরা কাঁচ পরে আছে। সে মুখ কাচুমাচু করে বলে, আজকে তো মহা বিপদে পরেছিল স্যার। আমি কিছু বলার আগেই আমার বড় ভাই জিজ্ঞেস করে, মানে? উত্তরে সে যা বলল তা হল এ রকম –

আমার বাবা, সাথে মেডিকেলের আরো কয়েকজন শিক্ষক হলে গিয়েছিলেন ছাত্রদের মাথা ঠান্ডা করে হল ত্যাগ করার ব্যাপারে আলোচনা করে নিস্পত্তি করতে, এক পর্যায়ে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠে, কোন ফলাফল না পাওয়ায় তারা বের হয়ে আসেন, ফিরতি পথে শিবিরের লোকজন আমার বাবার গাড়ীতে আঘাত হানে, ২ টা জর্দার ডিব্বায় আগুন ধরিয়ে ছুড়ে মারে, কিন্তু আমার মত মামদোবাজের বাবা বলেই টান দিয়ে সেখান থেকে বের হয়ে আসেন তিনি, ডিব্বা দুটো মাটিতে পড়ে ফাঁটে বলে কেউ আহত হন নি, কিন্তু এই ফাঁকে তারা আবার আঘাত চালায়, হকিস্টিক দিয়ে, গাড়ির পেছনের কাঁচ ভেঙ্গে বোমা গাড়ীর ভেতরে ঢুকাতে পারলে না সবাইকে এক ডিব্বায় মারা যাবে!!

আমার বাবা কোনমতে সবাইকে নিয়ে জান হাতে নিয়ে পালিয়ে আসেন। তারপরে বসে রুদ্ধদ্বার বৈঠক, সে সময়ে গন্ডগোলের সুত্রপাত ছিল ছাত্র মৈত্রী আর শিবিরের মাঝে হল ভাগাভাগি আর অস্ত্র জমা রাখা নিয়ে। যাক, আমরা ২ ভাই হাটতে থাকি বাসা অভিমুখে, পথে একটু পর পর পুলিশের ব্যারিকেড, বাচ্চা কাচ্চা বলে আর গায়ে স্কুলের পোশাক থাকায় কেউ আটকায় না আমাদের। বাসায় ফিরে আসি। আমি তখন ছোট মানুষ, কাজেই গাড়ীর দুঃখে চরম দুঃখিত, এদিকে আমার বাপের জানের উপর যে হামলা হল, তা আমি বুঝতেই যেন পারছিনা। দুপুরে বাবা মা বাসায় ফিরলেন, বাবার চেহারা দেখে আমি ভয়ে কাছে যাইনি দুইদিন। ভয়ে ভয়ে আম্মাকে জিজ্ঞেস করলাম, ঘটনা কী?
আম্মা বললেন, ফিরে এসে বাবা মিটিঙে যায় ঠিকই, কিন্তু সেখানে বেশিক্ষন থাকতে পারেন নি, কারন তার ডাক পড়ে ইমার্জেন্সিতে, তারপর শুরু হয় জমে মানুষে লড়াই একজন ডাক্তারকে নিয়ে। সেই হতভাগা ডাক্তারের নাম রতন। কী তার দোষ? সে মৈত্রী করত, আর এমন দিনে তাকে তারা একা পেয়েছে, আর বাগে পেয়ে আক্রমন করেছে। তাকে ক্যাম্পাসের বড় রাস্তার উপর আক্রমন করে শিবিরের কিছু নরঘাতক, তারপর তার সকল গিরা ধরে ধরে কাটতে থাকে তারা দা দিয়ে। তার হাত কাটা হয় কব্জিতে, কনুইয়ে, স্কন্ধে। দুই হাত কাটে তারা, তারপর শুরু করে পা, একজন জীবিত মানুষকে পশুর মত করে জবাই করে মারা এক জিনিষ, আর অত্যাচারের উদ্দেশ্য নিয়ে হাত পা কাটা আরেক জিনিষ। কাজেই পা কাটে এই নরপিশাচের প্রতিটি গিরা ধরে, অর্থাৎ গোড়ালী, হাটু, কোমর, সব আলাদা করে ফেলে। তারপরে তারা অপেক্ষা করতে থাকে, কতক্ষন তার দেহ নড়াচড়া করে, তা দেখার জন্যে। এক পর্যায়ে তার রক্তক্ষরনের কারনে মস্তিস্কে রক্তসরবরাহ কমে যায় বলে, তিনি জ্ঞান হারান। তারপর এই নরপিশাচেরা চলে যায় রাস্তার উপরে ডাঃ রতনকে ফেলে। এরপরে তাকে হাস্পাতালে নিয়ে আসা হয়, তার বাঁচার প্রশ্নই আসে না, তারপরেও যুদ্ধ চলতে থাকে, কিন্তু কিছুই করার ছিলনা কারো। ব্যাগের পর ব্যাগ রক্ত দেওয়া হতে থাকে, কিন্তু ততক্ষনে তার মস্তিস্কের কোষগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে যে কোন ভাবেই আর তাকে ফেরানো সম্ভব ছিলো না।

গ্যাদা কাল থেকে শুধু মানূষের মুখোশে শিবিরের দুর্নামই শুনে গেলাম, কারো কাছে ভালো কিছু শুনিনি এসব নরপিশাচদের নামে, এদের নামে কেউ ভালো কিছু বলতে পারলে জানিয়েন। কাজেই কেউ যদি এদের মানুষ বলে গন্য করতে চান, তার মানসিক সুস্থতা নিয়ে আমার প্রশ্ন জাগাটা কী খুব অস্বাভাবিক হবে? আর একটি অনুরোধ করে বিদায় নেই, সবসময় সচলে নিজের গল্প ফেঁদে সবার কানের পোকা বের করে ফেলার ব্যবস্থা করে ফেলেছি, কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে মনটা খুবই বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে যে না বলে পারছি না। কেউ যদি অজ্ঞানতার কারনে এমন ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হন, তাদের এই সব ভ্রান্ত ধারনা দূর করার জন্যে আমাদের উচিত একটা তথ্য ভান্ডার বানানো এবং স্বাধীন বাংলায় করা শিবিরের সকল কুকর্মের ইতিহাস সেখানে জমা করে রাখা। কেউ যদি ভুল করেও শিবিরের পক্ষে কিছু বলে ফেলেন, তাকে আমরা সেই সব কুকীর্তির ইতিহাস দেখিয়ে দেব চোখে আঙ্গুল দিয়ে, যাতে ভুল পথে চলার কোন সুযোগ কেউ না পান। ছোট মুখে অনেক বড় বড় কথা বলে ফেললাম, সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, সুস্থ চিন্তা করুন। আজ এখানেই শেষ করছি।

আমাদের কুদ্দুস ভাই

"সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি
সারাদিন যেন আমি লেখালেখি করি"

নারে ভাই, কবিতা লেখতেছি না, মারতেছিও না। এইটা হইল আমাদের বিখ্যাত লেখক এবং ব্লগার আবদুল কুদ্দুস ওরফে আকু ভাইয়ের মূলমন্ত্র। সকালে তার ঘুম ভাঙ্গে এই মন্ত্র জপতে জপতে। তারপর তিনি জৈবিক কার্য সেরেই ব্লগ খুলে বসেন। বহুত পুরানো ব্লগার তিনি, লেখেনও সেই রকম। হাবিজাবি ব্লগ সাইটে লেখার মত পাতি ব্লগার নন তিনি। হাজার হলেও সিনিয়ার মানুষ তো। তার মত কৃতিমান ব্লগারের কথা জানতে পেরেও বুকের মাঝে কেমোন চিলিক পারা আনন্দের সৃষ্টি হয় যে কি বলব, ঘুমের মাঝেও চিক্কুর পাইরা উঠতে ইচ্ছা করে।

তা উনার নিজেরই ব্লগ সাইট আছে আকুপাকু.কম নামে, সেখানে তিনি ব্লগ লেখতে লেখতে চুল দাড়ি পাকায় ফেললেন প্রায়, তার ব্লগে আবার নাম ধাম নিতে কোন সমস্যা নাই, তিনি খাপ খোলা লেখা লেখতে যেমন পছন্দ করেন, তেমনি পছন্দ করেন অন্যের খাপ খোলা মন্তব্য শুনতে। আর যেহেতু উনার ব্লগে কেউ কারো মাথায় ছড়ি ঘুড়ায় না, এজন্যে যে যার মত ব্লগ লিখে যায়। কিন্তু সুখে থাকলে মানুষকে ভুতে কিলায়, ফলাফল আমাগো আকু ভাইরেও ভুতে ধরল, তিনি নিজের ব্লগের মান নির্ধারনের জন্যে অন্যান্য ব্লগে ঢুঁ দেওয়া শুরু করল। এইভাবে সে একদিন সচলায়তনে এসে হাজির হল।

এইখানে এসে আকু ভাই বুঝল যে, আরে এই খানে তো অনেক কিসিমের লেখা আসে, অনেক সমঝদার লোকও আছে, এইটা না তার আসল ঠিকানা। কাজেই সাথে সাথে নিবন্ধন করে ফেললেন আমাদের আকু ভাই। কিন্তু মর জ্বালা, এখানে তো নিয়ম কানুন অন্যরকম, প্রথমে অতিথি নামে লিখতে হয়, তারপর মডু দাদারা সেটা পড়ে মান বুঝে ছাড় দেন। তিনি তো হেসেই কুল পান না, তার লেখা ঠেকাবে এমন মডারেটর আছে নাকি ত্রিভুবনে! ২ কাপ চা পিরিচে ঢেলে খেয়ে ফেললেন তিনি, তারপর পিরিচটাও চেটে নিয়ে আঙ্গুল মটকিয়ে লেখতে বসলেন।

পারলে আজকেই নামিয়ে দিবেন টেলিশের টেলিফোন বইয়ের সমান লেখা। তরতর করে করে লেখে যেতে লাগলেন তিনি। মোটামোটি পাতা পাঁচেক লেখার পর ভাব্লেন, এত উচ্চ মার্গের লেখা তো মনে হয় না এখানে কেউ লেখে, তাই এখানেই ক্ষ্যান্ত দেওয়া যাক আজকে রকমের মানসিকতা নিয়ে লেখা পুস্টায় দিলেন। বুঝেন অবস্থা, এ কালের সেরা ব্লগার তিনি, আর ধৈর্যের কোন কমতি নাই, তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন আকুপাকু.কম, আর সচলে লেখা দেওয়া তো কোন ব্যাপারই না। ব্লগিং কাকে বলে বুঝিয়ে দেবেন তিনি সবাইকে। সচলকে সমৃদ্ধ করবেন তিনি, এই সংকল্পে বদ্ধপরিকর হলেন আমাদের আকু ভাই।

রাতে লেখা দিয়ে ঘুমাতে গেলেন, সকালে উঠে দেখেন, বাহ, প্রথম পাতায় ঝকঝক করছে তার লেখাটা। তার লেখায় ১২ টা মন্তব্যও পড়েছে, গর্বে তার বুক ফুলে উঠে, আনন্দে আলাজিহ্বা বের হয়ে যায়। পোস্ট খুলে তিনি আঁৎকে উঠেন, একি, ৫ টে ১ তারা দিয়েছে তাকে কে যেন। কার এত বড় সাহস! তার তো মাথা গরম হয়ে যায়, গরম মাথা নিয়েই মন্তব্য পড়তে শুরু করেন। বিশাল মন্তব্য করেছে তার প্রথম মন্তব্যকারী, নানা ভাবে তাকে জ্ঞান দিয়েছে, আর বলেছে বই পড়তে, সে যা লিখেছে, তা নাকি কোন ভাবেই বাংলা নয়। রাগে তিনি কাঁপতে থাকেন, কাঁপা হাতেই জবাব দিতে থাকেন। আরে ব্যাটা বিশিষ্ট লেখক হুমাও তো মায়ের পেটে থেকে পড়েই লেখা শুরু করেছে। সেখানে সে নাহয় আরেকটু পরেই লেখা শুরু করেছে, তাই বলে এত বড় কথা। সে কিনা কত দিনের ব্লগার। আকুপাকুতে তার উপদেশ পাবার জন্যে অন্যেরা হা করে বসে থাকে।

তিনি প্রথম লেখেন ৭ বছর বয়সে, প্রথম লেখা ছিল একটা হাসির গল্প, সেটা পড়ে কেন জানি কেউ বুঝল না, প্রথম এক প্যারা পরেই পড়িমড়ি দৌড়, তবে পাড়ার পাগলা মজনুকে তিনি পড়ে শুনিয়েছিলেন গল্পটা, কিন্তু পাগল মানুষ তো গল্প শুনিয়ে শেষ করতে না করতে রক্তবমি করতে করতে পাগলাটা মারা গেল। কিন্তু তাতে তার লেখা আটকায় থাকে নাই। ১৮ বছর বয়সে তিনি ব্লগিং শুরু করেন। তার ব্যাপারে উড়া কথা শুনা যায়, তিনি নাকি স্কুলে থাকতে রচনা লেখলে স্যারেরা পড়ার মত ধৃষ্টতা দেখাতেন না। খাতা না খুলে ১৫ তে ১২ দিয়ে দিতেন। পাছে যদি আবার আকু ভাই তার বাবা মাকে ডেকে আনেন, তখন তাদের সমানে ঐ রচনা তো পড়তে হবে, আসলে মজনুর কথা কেউ ভুলতে পারে নাই।

যাক, আস্তে আস্তে তার রাগ পড়ে আসে, আসলে এরা বুঝতেই পারে নাই, তিনি কি লিখেছেন, তাই এসব আবোল তাবোল মন্তব্য করেছে। আর তিনি তো "সমুদ্রে পেতেছি শয্যা, শিশিরে কিসের ভয়" এ বিশ্বাসী, ১০-১২ টা খারাপ মন্তব্যে ভয় পাবার প্রশ্নই আসে না, কাজেই মন্তব্য করা বাদ রাখলেন। বরং দ্বিতীয় লেখায় হাত লাগালেন। দেখ ব্যাটারা, এবার আরো সহজ করে লেখব, যেন বুঝতে পারিস। তারপর কাজে চলে গেলেন। নানা কাজের ফাঁকে সচলে আসতে পারেন নি, ফলে দেখতে পেলেন না, তার দ্বিতীয় লেখার করুন পরিণতি।

এবারে মন্তব্য এসেছে আরো বেশি, কিন্তু সমস্যাটা তিনি বুঝতে পারলেন না, তার লেখা কেউ বুঝতে পারছে না কেন? এবারে তো এক্কেবারে সহজ করে লেখলেন, কি মুসিবত। যাক দানে দানে তিন দান, আবার লেখতে বসলেন। এবারেও যদি তার লেখা কেউ বুঝতে না পরে, তাহলে তো ইজ্জত নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে। এদিকে আকুপাকুর সবাই জেনে গেছে তিনি সচলে লেখা দিয়েছেন। আবারো লেখা দিলেন, এবারে দেখা গেল, তার লেখায় প্রায় কোন মন্তব্যই পড়ে নাই, তবে ভোট পড়েছে প্রায় ১০টা ১ ভোট। রাগে দিশেহারা হয়ে গেলেন আমাদের প্রি্য ব্লগার আকু ভাই। আজকে তোদের একদিন কি আমার একদিন। হঠাৎ করে মাথায় এক বুদ্ধি এল, আসলে এখানে সাড়া পেতে হলে তাকে এদের মত করে লেখতে হবে, কাজেই কয়েকজনের পুরানো ব্লগ ঘাটতে লাগলেন, একটা লেখা খুব পছন্দ হল, সেটা খুব জনপ্রিয় এই ব্লগ সাইটে।

কাজেই তিনি ছদ্মনাম হাকু নিয়ে ঐ লেখাটার আদলে আরো রসিক আরেকখানা লেখা দিলেন। কিন্তু দেখা গেল, এক ভোদাই অতিথি ফাল পাড়তে পাড়তে এসে তাকে খুব গালমন্দ করল, তাছাড়া অন্যান্য যারা ছিলেন, তারাও ভ্রদ্রতার রাশ টেনে ধরে অনেকভাবে তাকে কথা শুনিয়ে দিল, কিভাবে যেন বুঝেও গেল, যে তিনি আকু ভাই। কাজেই তাকে বিদায় নেওয়া ছাড়া উপায় থাকল না। মহা বিপদ, তিনি বুঝতে পারলেন না, পূর্ণ সচল যারা, তারা নাহয় তাকে উপদেশ দেন, কিন্তু যারা অতিথি, তারা কেন এমন তাফালং করে, তিনি আর তারা তো একই দলে। কি উগ্র ভাবেই না তারা তাকে নিয়ে পরিহাস করে।

কিন্তু ইতিহাসেও এমন কেউ নাই যে তাকে অধ্যবসায়ে হারাইতে পারে, সবাই কিনা কথা কথায় কথায় রবার্ট গ্রসের কথা বলে, আরে ঐ ব্যাটা তো একটা ভন্ড বিশ্বাসঘাতক, নিজের বন্ধুরে ধরায় দিসিল সম্পত্তির লোভে, পরে অনুশোচনায় পইড়া না ব্যাটা যুদ্ধ করতে আসল। তিনি তো শত কেন, হাজার বার দরকার পড়লেও ফিরে আসবেন এই সচলে, এদের দেখিয়ে দিবেন ব্লগ কিভাবে লেখে, ব্লগ কত প্রকার ও কি কি! তাই তিনি গুন গুকরে গান গাইতে গাইতে আবার লেখতে বস্লেন... ... ...

যদি তোর ব্লগ পড়ে কেউ না হাসে
তবে একলা পড় রে ... ... ...
একলা লেখ, একলা পড়
একলা লেখ, একলা পড়রে ... ... ...

Monday, October 19, 2009

ছিদ্রান্বেষী

অনেকদিন কিছু লিখি না, নানান রকমের ঝামেলা এসে মাথায় ভর করেছে একসাথে, প্রতিদিন ভোর ৫টায় উঠে দৌড়াতে হয় দূরে এক হাসপাতাল, ১ ঘন্টার রাস্তা উড়ে যাই যেন ৪৫ মিনিটে, আর আল্লাহ-বিল্লাহ করি, যেন মামু না ধরে। এর মাঝে সবাই অনবরত জিজ্ঞাসা করে যাচ্ছেন লেখি না কেন। রোজ বাসায় ফেরার পথে ভাবি, আজ গিয়ে কিছু লেখব, কিন্তু বাসায় এসে কোনমতে দিনের প্রথম ভাত গলাধ:করণ করে মেয়ের সাথে কতক্ষণ খুটুর মুটুর করে আবার ঘুম দেই, লেখব কখন? তারমাঝে সচলে বেশ কয়েকদিনে কোমর বেধেই যেন ঝগড়া করলাম কয়েকজনের সাথে। একজন তো আবার আর এক লেখা পড়েই আমার চরিত্র বিশ্লেষণ করে ফেলল। যাক, প্রথম সুযোগেই আবার অপরের বদনাম শুরু করেছি। মানুষের ছিদ্র খুঁজতে কেন যেন ব্যাপক মজা লাগে। কোথাও কাউকে পেলেই হেঁড়ে গলায় বদনাম শুরু করে দেই। তাই ঠিক করলাম, বেহুদা মানুষের ছিদ্র অন্বেষণ না করে নিজের ছিদ্রই খুঁজি না কেন?

আমি নিজেকে খুব রসিক মনে করি, সবাইকে নানাভাবে যন্ত্রণা দিতে পারলে আমার বিটকেল দাঁত থেকে আলাজিহ্বা পর্যন্ত সবই বের হয়ে যায়, কিন্তু দেখা যায়, অন্যকেউ সেই রসিকতা করলে প্রায় সময়ই সেটা গ্রহণ করতে পারি না, গরম কড়াইয়ে পানি পড়লে যেমন ছ্যাঁত করে লাফিয়ে উঠে, আমিও যেন সেভাবেই সমালোচকের ঘাড়ে চড়ে বসি। তারপর আবার বনমানুষের মত বুকে বাড়ি দিয়ে বলি, আমার চামড়া অনেক মোটা, কারো কথায় আমার কিছু আসে যায় না!!

কাজের সুবিধার্থে ধুমধাম মিথ্যা কথা বলি, এমনকি চোখের পাতাও পড়ে না, এমন হয়েছে যে, যার সাথে চাপা মারছি, তাকে নিয়েই হয়ত চাপা মারছি, এক পর্যায়ে সেও দ্বিধান্বিত হয়ে যায়, আসলেও সত্যি নাতো? অবশ্য বেশীর ভাগ সময় তা মজা করার জন্যই করে থাকি। তবে মজা বেশী হয় যখন আমার মারা চাপা, চামের উপর বামে দিয়া লেগে যায়। একটা উদাহরণ দেই, তাহলে বুঝবেন, আমার শালীর এক দোস্তের সাথে অন্তর্জালে বকবক করছি, আজাইরা প্যাচাল পারতেছি, কথা বলতে ইচ্ছা করতেছে না, নানা ভাবে ইংগিত দেবার পরও যায় না। হঠাৎ মাথায় দুষ্টামি ভর করল, বললাম, "শুনলাম, তোমার বয়ফ্রেন্ডের বলে মাথায় সমস্যা" যেহেতু আমি জানি, ঐ মেয়ের বয়ফ্রেন্ড নেই, কাজেই আমি জানি সে হেসে উড়িয়ে দিবে, সে তো ঐদিকে মহা গম্ভীর, আর কথা বলে না, খালি একই প্রশ্ন, কে বলল আপনাকে? অমুকে বলেছে? তমুকে বলেছে? তারপর আমার শালীকে অন্তর্জালে পেতেই তাকে আক্রমন, একটু পরে আমার শালী ফোন করেছে, আপনে কি বলেছেন "____" কে, আমাকে দোষ দিচ্ছে, যেন আমি বলে দিয়েছি, ঢাকা থেকে ফোন করতেছে একটু পরপর। আমি তো হাসতে হাসতে শেষ।

নোটিস দিয়ে বাসায় হাজির হয়ে ভাত খেয়ে বের হওয়া মনে হয় আমার মহৎ গুনাবলীর মধ্যে আরেকটা, আর এই গুনের ফলাফল ভোগ করেছে আমাদের মৃত্তিকা সহ আরো অনেকেই। কেউ রাঁধতে না পারলেও মাফ নাই, অফিস থেকে গাড়ি করে তুলে নিয়ে খাবারের দোকানে গিয়ে হাজির। তারপর জিজ্ঞেস করব, কি খাবা? তারপর বিল দেবার সময়, ইয়ে মানে, আমার কাছে ক্যাশ নাই, বিলটা একটু দিতে পারবা? এমন শিকারে পরিণত হয়েছে মনে হয় সবচেয়ে বেশী অনিকেতদা।

রাঁধতে পারি না কিছুই, অথচ খাবার সময়, নাক সিঁটকিয়ে বলে ফেলব নির্লিপ্তভাবে, "এহ হে, খাবারে লবণ বেশি হয়েছে বা কম হয়েছে" অথবা, "ধুর এইটা কি কোন রান্নার জাত হল, মুখেই দিতে পারছি না", অথচ নিজে রান্না করলে ধুরুম ধারুম প্লেটে উঠিয়ে দিব, আর মুখ ফুটেও বলব না, আমি রান্না করেছি, পাছে যদি কেউ না খায়। হাবিজাবি রান্নার প্রায়ই অপচেষ্টা করতে থাকি, আর এই যন্ত্রনার শিকার হয় আমার স্ত্রী। বেচারী আগে মুখে দিত, আমার চিকেন মারসালা (মারসালা ওয়াইন দিয়ে জ্বাল দিতে হয়, ভাজি করার পর) খাবার পর থেকে পথ ভুল করেও আর এসব মুখে দেয় না। আমি যেসব জিনিষ খাই, সেগুলাই যেন দুনিয়ার সেরা খাবার, যেটা খাইনা, সেটা আমার সামনে কেউ খেলে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপে ব্যাপকভাবে নাজেহাল হতে হয়। যেমন, সেদিন কাকড়ার শেদ্ধ ঠ্যাঙ নিয়ে বসলাম, প্লায়ার দিয়ে ভেঙ্গে ভেঙ্গে খাচ্ছি, আর আসে পাশে বসা সবাই তটস্থ হয়ে আছে, কখন সেই পানি গিয়ে গায়ে লাগবে, অথচ আমার কোন বিকার নাই।

রান্না নিয়ে আরেকটা ঘটনা বলি, যেটা আমি খাইনা, কেউ আমাকে জোর করে খাওয়াতে পারবে না, আমার স্ত্রী আর শাশুড়ি এপর্যন্ত আমাকে খাইয়ে শান্তি পেল না, কারন উনারা যেসব পছন্দ করেন, আমি সেসব খাইনা। আমার স্ত্রী পটল আর সাজনা খায় না, এই নিয়ে কত যে কথা শুনালাম, ২-৩ বার ভুং ভাং দিয়ে খাইয়েও দিয়েছি পটল। যাক, এদিকে আমার স্ত্রী গরুর জিহ্বা খায় না, খাওয়া তো দুরের কথা, দেখলেই তার বমি পায়। তার মনে হয়, একটা গরু দাড়িয়ে হাম্বা হাম্বা করতে করতে জিহ্বা বের করেছে, আর আমি লাফিয়ে গিয়ে কামড়ে ধরেছি গরুর জিহ্বা, দুর্ভাগ্যবশত গত ৪ বছরে আমি সন্ধান পাইনি জিহ্বার, হঠাৎ সেদিন শপ-রাইট নামের এক বিপনীবিতানে গিয়ে দেখি, বিশাল বিশাল গরুর জিহ্বা। স্ত্রী সাথে যায়নি, এই সুযোগ, চুপচাপ কিনে এনে সোজা ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিয়েছি। তারপর নানা কসরত করে রান্না করেছি। আমি খুব ভালো ভাবেই জানি, আমার স্ত্রী আমার অপছন্দের কিছু রান্না করতে গেলে বাসা মাথায় তুলে ফেলতাম। এজন্যে আমি আমার স্ত্রীর ধৈর্যের কাছে চিরঋণী। সেই সুযোগে আমি আবার ইদানিং তাকে সাধাসাধিও করি জিহ্বা খাবার জন্যে।

আমাকে আপন কেউ যদি কিছু বলেন, তখনই সাথে সাথে ঘাড়টা ত্যাড়া হয়ে যায়, যত ভালো কথাই বলুক না কেন! যেই বাইরের কেউ সে কথাটা বলে, তখন যেন এই শূন্য নারিকেলের খোল ভেঙ্গে শব্দ মাথায় ঢোকে, আমার প্রিয়জনেরা আমাকে হজম করেন কিভাবে, সৃষ্টিকর্তাই মনে হয় জানেন। আর তর্ক করার কথাতো বল্লামই না। কারনে অকারনে তর্ক করে আগে ব্যাপক মজা পেতাম, এখন আর পাই না। কিন্তু এসব ছিদ্রতো অতিশয় ছোট, সবচেয়ে বড় ছিদ্র হল আমার রাগ। কাথা বলতে বলতে হঠাৎ করেই রাগ উঠে যায় আমার মাঝে মাঝে, বা বেমক্কা কেউ যদি ধাক্কা দেয়, আর আমার চশমা যদি বেসামাল হয় তাতে, তাহলে কথাই নেই। কদিন আগে বাসা পাল্টালাম, বাক্স নামাচ্ছি একা একা, সিড়িতে বাক্সের গুতা লেগে চশমা পড়ে গেল, এমন রাগ উঠল যে কি বলব। নিজের সাথেই ব্যাপক খিস্তি খেউড় শুরু করলাম, পাশের বাসার মহিলা দৌড়ে চলে এসেছে, কাকে খিস্তি দিচ্ছি দেখার জন্যে। অনেক সময় খিস্তি হয়ত দেই না, কিন্তু হঠাৎ করেই মেজাজ প্রচন্ড খারাপ হয়ে যায়, তখন সামনে যে থাকে, ২-১ টা বিশ্রী ধমক অন্তত জুটে।

গাড়ি চালাতে গেলে রাগ খুব একটা উঠে না, চাপ দিলে বেশির ভাগ সময় পাল্টা চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকি বা থাকার চেষ্টা করি। যারা আমার মামদোবাজি সিরিজ পড়েছেন তারা জানেন ৫নং এর ঘটনা। এরপর থেকে চাপ খেয়ে চাপ দিতে পাগল হয়ে যাই না। কিন্তু তারপরেও রাগের বহি:প্রকাশ হিসাবে গাড়ি শিকার হয়েছে বহুবার। দেশ থেকে "সুইডেন ফিরোজ" আসল ডেলাওয়ারে, ব্যাটা একটা আস্ত গাড়ল। তার গল্প নাহয় আলাদা করে লেখব। যারা বুয়েটের ছাত্র তারা মনে হয় আমাকে কাঁচা খেয়ে ফেলবেন আমার ঐ লেখার দেবার পর। যাক, তাতে কোন সমস্যা নাই। তিনি বু্যেটে বর্তমানে পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রধান। ইনার স্ত্রীকে আর ২ মেয়েকে নিয়ে গেলাম আমাদের শহরের মলে, তারা জানেন যে, রাতে আমাদের নিউ ইয়র্ক যেতে হবে, আমি উনাদের কতক্ষন ঘুরার পরে বললাম, আমি গাড়ি নিয়ে J C PENNY এর সামনে দাড়াচ্ছি, আপনারা ১৫ মিনিটের মাঝে চলে আসেন। আমি বাইরে গিয়ে এসে দাড়িয়ে আছি, সিকিউরিটি এসে আমাকে কয়েকবার তাড়িয়ে দিল, কিন্তু এই ভদ্রমহিলার আর কোন খবর নেই, আমি আমার স্ত্রীকে ফোন করে তাড়া দিচ্ছি, আর সে বলে, এইতো ৫ মিনিট। এভাবে ৪৫ মিনিট যখন পার হয়েছে, তারা এসে হাজির গেটে। এরপর তাদের গাড়িতে উঠিয়েই ধুন্দুমার টান, পুরা ঢাকাই ফ্যাশানে টান। তিনি নানা রকমের দোয়া দুরুদ পড়া শুরু করলেন, আমাকে কয়েকবার উপদেশ দেবারও চেষ্টা করলেন, এদিকে আমার স্ত্রী চুপ, কারন সে তো জানে, ঘটনা, খারাপ। আমি মলের পার্কিং লট থেকে ধোঁয়া উড়াতে উড়াতে ২ গাড়ির মাঝে খান দিয়ে সাই করে টান দিয়ে গিয়ে আই-৯৫ এ উঠলাম, তারা পোঁ পোঁ করে হর্ণ বাজালো, তাতে কি আমার রাগ পড়ে? আই- ৯৫ এ উঠেই একটানে ৯০ মাইল, তারপর এর ওর ফাঁক দিয়ে সাই সাই করে ওভারটেক করতে থাকলাম। বাসায় এসে যখন নেমেছি, চারদিকে টায়ার পোঁড়া গন্ধ, আর পেছনে বসে মা-মেয়ে ৩ জনের গা হাত-পা ঘেমে গিয়েছে। এরপর তারা আর আমার গাড়িতে উঠে নাই।

চলবে?

সব কটা জানালা ফেলে দাও না

কালকে খোমাখাতায় উবুন্টু নিয়া মজা করতে গিয়ে মনে হইল, যাই এইটা নিয়া আরেকটু মজা করি গিয়া। ভিন্ন সময়ে ভিন্ন জানালার আগমনের সাথে সাথে আমার মানসিক অবস্থা নিয়া লেখা শুরু করব বলেই ঠিক করলাম। আমার দেখা প্রথম জানালা ছিল ৩.১১, সাল ১৯৯৫। সম্ভবত খুদেনরম কোম্পানির অন্যতম বিশ্বস্ত কার্যকরি অনুক্রম (অপারেটিং সিস্টেম, কারো মাথায় ভালো বাংলা আসলে একটু সাহায্য করতে পারেন)। যাক, ডসে কম্পু চালু কইরা উইন লিখে জানালা দিয়ে উঁকি মারতে ব্যাপক মজা পাইতাম। আর তারচেয়েও মজা ছিল ডসের খেলাগুলা, পারস্যের যুবরাজ, প্যারানয়েড এবং অন্যান্য। তখন কিভাবে কম্পু চালায় তাই জানতাম না, কাজেই চালু করে ফাইল ঘাটতাম আর ই-এক্স-ই, কম, ব্যাট ওয়ালা ফাইল পাইলেই চালানোর চেষ্টা করতাম। এক পর্যায়ে শিখলাম, কম্পুর অনেক ফাইল দরকারি না, কাজেই মুছা শুরু করলাম, তখনও জানতাম না যে, কমান্ড.কম ছাড়া কম্পু চলে না। মুছতে চায় না, আমিও কি কম গাড়ল, তখন নরটন কমান্ডার ব্যবহার করতাম, গায়ের জোরে মুছে দিলাম, আর তো চলে না।

এভাবে চলতে থাকে জানাল দিয়ে উকিঝুকি, হঠাৎ করেই শুনি, নতুন মাল আসতেছে, নাম জানালা ৯৫, এটা নাকি দেখা মাত্র মাথা বন বন করে ঘুরবে। আমার প্রথম কম্পু কিনেছিলাম আমার বড় ভাইয়ের বন্ধুর মামার দোকান থেকে, কিছু হলেই গিয়ে তার ঘাড়ে চড়ে বসতাম, মামা এটা দেন, সেটা দেন, প্রথমবার যখন ইন্দুর দৌড়ানি বন্ধ করল, নিয়ে দৌড় মামার কাছে, তিনি হেসে দেখিয়ে দিলেন, কিভাবে খুলে পরিষ্কার করতে হয়, বিরক্ত করেছি অনেক, তবে আমার হাতে সময় থাকলেই গিয়ে উনার জোড়াতালির ঘরে গিয়ে বসে থাকতাম, কিভাবে কার সাথে কোনটা লাগায়, কোনটার কি নাম, কি কাজ, হেন হেন কতকিছু। কাজেই জানালা ৯৫ যখন এসে হাজির হল, আমার না পাওয়ার প্রশ্নই আসে না, ২ প্যাকেট ফ্লপি কিনে বান্দা হাজির, বললাম, মামা আমি কপি করে নিব, আপনার কষ্ট করতে হবে না, কাজেই ১৫ ফ্লপিতে জানালা কপি করে নিয়ে পড়িমড়ি দৌড়।

বাসায় গিয়ে সে কি উত্তেজনা, ভাত আর নামে না গলা দিয়ে, কতক্ষনে জানালা লাগাবো আমার বাক্সে। যাক, প্রায় ১ঘন্টা ঘুটুর মুটুর করে অনেক ঢাক গুড়গুড় করে বাক্সে জানালা লাগাইলাম, তারপরে আসল, "জানালা ৯৫ এখন এই কম্পুতে চলবে প্রথমবারের মত"। দেখে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেল আমার শিড়দারা দিয়ে। তারপরেই শুরু হল নানা রকমের যন্ত্রনা, শব্দ আসে না, মনিটর কেমন করে, কত পদের ঝাকাঝাকি যে দেখলাম। তারপরে বুঝলাম, আচ্ছা অটোএক্সেক.ব্যাট এ কিছু লিখে রাখলে তা এমনিতেই শুরুতে চলতে থাকে। ড্রাইভার এর জন্যে উইন.আই-এন-আই এ কিভাবে কি লিখতে হয়। প্রতিদিনই নতুন কিছু শিখছি। আর সেই সাথে চলছে নগ্ন মহিলাদের ছবি সংগ্রহের যুদ্ধ, খালি খবর পেলেই হল, অমুকের কাছে ১৫টা ছবি আছে, ফ্লপির পোটলা নিয়ে দৌড়। আর এক ফ্লপিতে না আটলে পিকে-জিপ দিয়ে কমান্ড লিখে ছোট ভাগে ভাগ করে ফাইল আনার পন্থাও তখন শিখে গেছি। আমার এই সব কুকর্মের সাথী ছিল আমার দোস্ত ইমরান, সে বেচারাও এখন মারিকায় থাকে, বাফালোতে। একদিন খবর পেলাম, শরিফের কাছে নাকি এত ছবি আছে, যে দেখে শেষ করা সম্ভব না, বিকালে স্যারের কাছে পড়তে যাবার কথা, কিন্তু তা কি করে হয়, আমরা দুজনে ছুটলাম, শরিফের বাসায়, আমার ২০টা আর ইমরানের ২০টা ফ্লপি নিয়ে, ৩৩টা লাগল মনে হয়, তারপর সেই ছবি নিয়ে এসে সব বন্ধুকে ছবি দেখার দাওয়াত দেবার মধুর দিনগুলোর কথা মনে পড়লে দাত বিটকেল হাসি বের হয়ে যায়।

এভাবে কেটে যেতে থাকে ১৯৯৬, আমি তো প্রবল উৎসাহে সবাইকে দেখাই, আমার কম্পুতে জানালা ৯৫ আছে, ততদিনে হার্ডডিস্ক খুলে দৌড়ানোর সাহস অর্জন করেছি, ফ্লপি আর সহ্য হয় না, যখন তখন বাতিল হয়ে যায়। আমার এই অতি উৎসাহ দেখে আমার ফুফাতো ভাই বললেন, আরে মিয়া, এইসব দেখে লাফাইও না, এগুলা সব বিল কাগুর চুরির ফসল। এখানে থেকে সেখান থেকে চুরি করে জোড়াতালির ফসল এই জানালা ৭। আর কোন খেলা চলতে চলতে হঠাৎ আটকে যেত, মেজাজটাও খারাপ হত তখন সেই রকম। ততদিনে 'মরটাল কমব্যাট - ২' এর ভুতে ধরেছে আমাকে আর আমার আরেক ফুফাতো ভাইকে। সারাদিনই মার মার কাট কাট চলছে। এমন পিটানো পিটাইলাম যে কি বলব, কিন্তু আমার ভাইটাও কম যায় না, আমাকে পেদিয়ে ছাদে তোলার অবস্থা করছে, আর আমাদের এইন পিটাপিটির ফলাফল সহ্য করে যাচ্ছিল কিবোর্ড খানা, এক পর্যায়ে সে বেঁকে বসল। কিন্তু তখন কিবোর্ডের অনেক দাম, আম্মাকে বললেই টাকা না দিয়ে পেদিয়ে আমাদের দুজনকেই চাঙ্গে উঠাবেন, কাজেই দুজনেই মাথা ঘামাতে লাগলাম, কি বলে আম্মার মন নরম করা যায়। একবার ভাবলাম, বলব, ভাইরাস ধরে কিবোর্ড নষ্ট হয়ে গেছে, পরে ভাবলাম, আম্মা যদি কাউকে জিজ্ঞেস করে, তবে পিটিয়ে ছাদে না তুলে পিঠের চামড়া তুলে মরিচ দেবার সম্ভাবনাই বেশি। এর মাঝে বাজারে আসল জানালা ৯৭।

এবার হার্ডডিস্ক নিয়ে হাজির, "মামা, ৯৭ দেন" ব্যাপক জরুরি। মামা আমাকে তাড়াতাড়ি বিদায় করতে পারলেই মনে হয় বেঁচে যান, তাই বিনাবাক্য ব্যয়ে আমাকে দেখিয়ে দিলেন, অমুক কম্পুতে ৯৭ আছে, কপি করে নাও। আমিও পটাপট কপি করে আবার দে-দৌড়। ৯৭ লাগিয়ে আম্মাকে গিয়ে বললাম, "আসলে কম্পুতে নতুন 'নরমতার' লাগানোর পর থেকে কিবোর্ড আর কাজ করছে না", উনি বললেন, "ব্যাটা নচ্ছাড়, নতুন জিনিষ ভরেছিস কেন?" আমি মুখ কাচুমাচু করে বললাম, আসলে আগামী ২ মাস পর থেকে জানালা ৯৫ আর কাজ করবে না। উনি বললেন, "হুমম", যা কিবোর্ড কিনে নিয়ে আয়। যাক, নতুন কিবোর্ড কিনে এনে পণ করি যে, আর খেলবো না, কিসের কি? এক বন্ধুর কাছে খবর পেলাম, মরটাল কমব্যাট - ৩ এসেছে, সেখানে নাকি মারলে ছাদ ভেঙ্গে উপর তালায় উঠে যায়। সেই সাথে আরো কতকিছু। ততদিনে গেম খেলার পাশাপাশি খুদেনরমের অফিস, কোরেল ড্র, লোটাস নিয়ে খোচাখুচি চলছে ব্যাপক হারে। এর মাঝে খবর পেলাম, আমার আরেক দোস্ত সালমান (নটরডেমের সবাই চেনার কথা) নাকি কি এক ফাইল বানিয়েছে, যেটা চালালেই গিয়ে কম্পু চালু হবার স্থানে গিয়ে আস্তানা গাড়ে, গিয়ে আরেকজনের কাছ থেকে সেই জিনিষও আমদানী করলাম। হাতে ফ্লপি নিয়ে তৈরি হয়ে চালু করলাম দোস্তের সেই জিনিষ, কম্পু নিজেই বন্ধ হয়ে পুনরায় চালু হল, কিন্তু, এক্কেবারে "খাস কাম" শুরু হয়ে গেল প্রথমেই, দেখে হাসতে হাসতে আমার চোখে পানি চলে আসলো।

১৯৯৮ এ এসে আমি তো ৯৭ নিয়ে বেশ কাহিল, আগারে বাগারে খালি আটকে যায়, খুদে নরমের অফিসের সাথে কি যেন একটা গ্যান্জাম ছিল, সেটা বন্ধ করলেই কম্পু আটকে বসে থাকত হা করে। মোটামুটি এ সময়ে এসে আমি এদের উপর মহা বিরক্ত। আর তখন বাপ-মায়ের কিছু কাজ করে দিতাম নিয়মিত, আর তাদের সামনে গালিও দিতে পারতাম না বিল কাগুকে শান্তি মত। আর কম্পুও বেশ পুরান হয়ে গেছে, আমার যাত্রা শুরু হয়েছিল 486DX2 দিয়ে। ততদিনে পেন্টিয়াম এসে পড়েছে বাজারে, কিন্তু, আম্মাকে বুঝাতে পারছি না যে কম্পু পাল্টানো দরকার। যাক, শেষমেষ আমার বড়ভাই বুঝাতে পারলেন কম্পু পাল্টানো দরকার, তারপরে কিনলাম, পি-২ ৩৫০। আমার ২য় কম্পুটা এখনও আছে। এর সাথে দোকান থেকে দিয়ে দিল বেটারা জানলা ৯৮। আমি তেমন কোন পার্থক্যই করতে পারলাম না, প্রথমের ছবিটা ছাড়া। ছোটখাট কিছু পরিবর্তন ছিল ৯৮ এ, তবে চলছিল ভালই, ৯৮ সালেই প্রথম পেলাম অন্তর্জালের সংযোগ। কিছুই বুঝি না, খুচিয়ে খুচিয়ে শিখতে লাগলাম, কিভাবে বার্তা পাঠায়, কিভাবে খুজতে হয় কিছু। ইয়াহু ছিল আমার প্রথম সার্চ ইন্জিন। তবে মিনিট হিসাবে বিল বিধায় বেশিক্ষন থাকতে পারি না সেখানে। ইউডোরা দিয়ে বার্তা ঠিক করে রাখি, ঢুকি, পাঠাই, বের হয়ে আসি। সংযোগ ছিল বি-ও-এল এর। খুব কমই আমাকে ২ বার ডায়াল করতে হয়েছে সংযোগের জন্যে। আর মেডিকেলে পড়াশুনা শুরু হয়ে গেছে, অন্যদিকে ফুটবল বিশ্বকাপ, আর প্রেমিকা, এই ফলে জানালা থেকে বেশ দুরেই সরে গেলাম যেন।

এর মাঝে মনে হয় বিল কাগুর গোপন স্থানে নানাবিধ অসুখ হয়েছিল, সারাদিন মনে হয় তার গা চুলকাতো, তাই সে বের করল মিলেনিয়াম এডিশনটা। কিন্তু আমি তার খবর পর্যন্ত পেলাম না, ভাগ্যিস, পাইনি। আর আমার সহপাঠিরা কেউ এ নিয়ে চিন্তিত না, তারা কম্পু চালাতে খুব একটা আগ্রহী না। তবে একজনের কাছে শুনলাম, এমন এক জিনিষ এই এম-ই, যে চালালে গান্ধিজিও রাম দা হাতে কোপাতে উদ্বুদ্ধ হবেন, আর দাঁত ভ্যাটকায়ে বলবেন, কোপাকুপি পরম ধর্ম। যাক, আমি এর পর হাতে পেলাম জানালা ২০০০। সম্ভবত এটা খুদেনরমদের বানানো একমাত্র ভালো জিনিষ। তার কারনটাও সম্ভবত এটা NT এর উপর ভিত্তি করে বানানো, সেজন্যে। এটা লাগানোর পর থেকে তো মহাবিপদের আবির্ভাব হল, কোন জিনিষ চলতে চায় না, কাউকে চিনতে চায় না, তবে একবার চিনিয়ে দিলে চুপ করে ঘর করতে থাকে। অন্তর্জাল থেকে ড্রাইভার নামিয়ে কাজ চালাতে লাগলাম। কিছু খেলাও ঝামেলা করত, কিন্তু তখন আমি খেলার উপরেও বেশ বিরক্ত। নিড ফর স্পিড ২ খেলতাম, বাসায় ২টা কম্পু তখন, নেটওয়ার্ক করা। ফিফা ৯৮ সহ আরো অনেক খেলা ২ কম্পুতে খেলি, মজাও অন্যরকম। এর মাঝে এন-এফ-এস ৩ আসল বাজারে, সে তো চলতেই চায় না, তখন জানলাম, এজিপিতে জোর না থাকলে, ব্যাটা মানুষের মাজায় জোর না থাকার মত হয়। আমি তো মহা হতাশ। সব খেলা খেলতে পারি না। এ কি জ্বালা, এই সব ভুং ভাং করতে করতে প্রথম বড় পরীক্ষা শেষ করলাম জীবনের।

পরীক্ষা শেষে আমার এক বন্ধু আরেক বন্ধুকে নিয়ে বাসায় আসল "ছবি" দেখবে বলে। বুঝতেই পারছেন, কিসের ছবি, যাক, সে নাহয় দেখল, তার কাছে জানলাম, নতুন জিনিষ আসতেছে, তার নাম জানালা এক্সপি। আমি বললাম তাকে আমার ৯৫-৯৭-৯৮ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা। সে বলল, আরে না, এটা খুব ভালো হবে, ড্রাইভার সংক্রান্ত জটিলতা দুর হবে পুরোপুরি এক্সপিতে। আমি যদি চাই, তার কাছে বেটা এডিশন আছে। আমি বললাম, বেটা বেটি বুড়া বুড়ি ছুড়া ছুড়ি বুঝি না, ভাই, মাফ চাই। কিন্তু আমার এই গোয়ার্তুমি বেশিদিন টিকল না। বছর ঘুরতেই এক্সপি হোমো করে ফেললাম, আমার মনে হয় না, আমি বিল কাগুরে কোন ক্ষতি করেছি, কিন্তু, এই জানালাটা এতই খারাপ ছিল যে কি বলব! নিজেই নিজেকে গাল পাড়তাম, আর কি বা করার আছে? কোন নিশ্চয়তা ছিল না, কম্পু চালু হবে কি হবে না, নানা ভাবে ক্র্যাক করলাম, কতবার যে ধুয়ে মুছে করলাম এক্সপি হোম, তার ইয়ত্তা নাই। দেখা গেল সব চলতেছে, তারপর হুট করে একদিন খুব জরুরী একটা কাজ পরে গেছে, হয়ত আমার বাবার একটা ক্লাস আছে কালকে, তার স্লাইড বানাতে হবে, এক্সপি বাবাজি ঐদিকে ভং ধরে বসে আছেন। কিছুই আসে না মনিটরের স্ক্রিনে। এভাবে মাস খানেক চলে গেল, হাতে পেলাম এক্সপি প্রফেশনাল। এর পরে যতদিন ঢাকায় ছিলাম, এমন একটা যন্ত্রনা করেনি কম্পু। আর আমিও কোন ঝুঁকি নিতাম না, ৩ মাস পরপর ফরম্যাট করে নতুন করে এক্সপি প্রো করে রাখতাম, যাতে করে কম্পুও টিপটপ থাকে।

এভাবে ভগিজগি করতে করতে আমার জীবন এগিয়ে গেল বেশ খানিকটা। ২০০৩ এ ডাক্তার হলাম, একা থেকে দোকা হলাম, ডিভিতে ভিসা পাইল বউ, ২০০৪ এ ইন্টার্নি শেষ করলাম, ২০০৫ এ এফসিপিএস পাশ করলাম, এই সময়ে বিল কাগুর জানালা এক্সপি খুব একটা ঝামেলা করে নাই। সে কোন প্রকারের কাশি দিলেই আমি বাজুকা দিয়া গুলি করতাম। ধর তক্তা, মারো পেরেক মার্কা অবস্থা, প্রচন্ড ব্যস্ত কাটতেছিল দিনকাল, সকালে কাজে যাই, দুপুরে আসি, বিকালে যাই, আসতে আসতে রাত ১২টা। ২০০৫ এর মাঝামাঝি চলে আসলাম বিল কাগুর দেশে। মারিকা আসলাম, কিন্তু আমার কম্পু আনতে পারি নাই একটাও, এত বই যে কি বলব, সব সুটকেস ওজন সীমার উপরে। যাক, এখানে এসে পিসি কিনলাম, আমি যে কত বড় ভোদাই, তার প্রমাণ স্বরুপ এইচ-পি এর পিসি কিনলাম, অনেক পয়সা পাতি খরচ করে, সাথে আসল এক্সপি হোম, কারন প্রো এর জন্যে ৯৯$ চায়, সব কোম্পানিই চায়। আর সাথে আনা প্রো লোডাইলাম না, কারন সেটা জেনুইন চেকে আটকায় যায়। যাক, দাত মুখ চাইপা চালাইতে থাকলাম হোম। আসল কপি হওয়ার কারনে সম্ভবত দেড় বছর বেশ ভালই চলল। এর মাঝে বাড়িওয়ালার পোলার কাছ থিকা টরেন্ট করা শিখলাম। তারপরে সেখান থেকে আস্তে আস্তে প্রো নামাইলাম, কিন্তু বিধিবাম, কাম করে না, সবই হয়, তারপর জেনুইন টেস্ট টপকাইতে পারে না। মহা যন্ত্রনা, এর মাঝে মাথায় এক কুবুদ্ধি আইল, এইচ-পির সাপোর্টে গিয়া কইলাম, আমার এক্সপি করা লাগব, হার্ড ডিস্ক ক্র্যাশ করসে, এখন কি করা? তারা কইল, পাঠায় দিতাসি এক কপি এক্সপি হোম এডিশন। সেইটা আবার যতখুশি করা যায়, খালি শেষে আমার কম্পুর গায়ে দেওয়া সিরিইয়াল্টা দিতে হয়। নানা ভাবে চেষ্টা কইরাও যখন প্রো এর অরিজিনাল কপি হাতাইতে পারলাম না, তখন আবার এইচ-পি রে কইলাম, আসলে আমার প্রো ছিল, আমারে প্রো পাঠাও, পাঠায় দিল, কিন্তু ব্যাটারা কত বড় বদমাইশ, সেটা ইনস্টল করতে গেলে বলে, তোমার কম্পুর জন্যে না এক্সপির এই ভার্ষন।

যাক, আমিও হোম নিয়া সুখে দুঃখে দিন পার করতেসিলাম, এর মাঝে কোল কম্পু কিনা ফালাইলাম, সেইখানে আইসা হাজির হইল বস্তা প্রিমিয়াম। কেবলে নতুন বাইর হইসে, ভাব সাবই অন্যরকম। যদিও কারো কাছে ভালো কিছু শুনি নাই, তাও আশায় বুক বাধলাম যে, এইবার নিশ্চই তারা ভালো কিসু বানাইসে বিল কাগু আর খুদেনরম। চালু করতেই দেখি বেশ ভুং ভাং, বেশ ঝকঝকে চকচকে আইকন, এবং মেনু গুলাও বেশ ভালো। কিন্তু এক্সপি চালাইতে অনভ্যস্ত, কেমন যেন খটকা লাগে সবকিছুতে। সবচেয়ে বিরক্ত হইলাম তাদের সবকিছুতে অনুমতি চাওয়ার বাড়াবাড়ি নিয়ে। আর রুট ড্রাইভে কিসু ভরতে চাইলে সরাসরি না করে দেয়। আমার কম্পু, আমার যেখানে ইচ্ছা, সেখানে খুশি ফাইল কপি করুম, তাতে তোর বাপের কি? কিন্তু দেখা গেল, তাতে বিল কাগুর নানা অঙ্গে দহন হয়, ফলাফল যা দাড়াইল, আমার যেখানে যেভাবে খুশি, কাজ করার স্বাধীনতা খর্ব হইল। সেইখানেই শেষ না, কিসু ইন্সটলাইতে গেলেই হালার মাথায় মাল উঠে, স্ক্রিন কালো হয়ে যার, কথা বার্তা বন্ধ করে দেয়। আর বুট করতে লাগে ৩ মিনিট, বন্ধ করতে গেলেও জ্বালা, ঘুমাইতে যাইতে লাগে ১ মিনিটের বেশি। আর ঝুইলা যায় অহরহ।

এইসব যন্ত্রনা কতক্ষন সহ্য হয় কন দেখি? কিন্তু কোল কম্পুতে আইসে বিধায় দাতে দাত চাইপা কাম করতে লাগলাম। ভাবলাম কয়দিন পরে সব সহ্য হইয়া যাইব। কিন্তু এযে বস্তা নয়, আসলে এতো বিষ্ঠা, খাস বিল কাগুর বিষ্ঠা, সহ্য হয় তো বদ হজম হয়। আরো কিছু জিনিষ লক্ষ করলাম যে, ২ দিন অন্তর অন্তর আপডেট আসে, কি নিয়া এত ভুজুং ভাজুং আল্লাহই জানেন। আমার মনে আছে। ৩ মাসে আপডেট আসছিল মনে হয় প্রায় ৮৬টার মতন, বস্তা আর অফিস মিলায়। আরো ভাবছিলাম, নতুন সিস্টেম, এই খানে তো ভাইরাস ধরব না। কিন্তু এত সুখ কি আমার কপালে আছে? ১ মাস যাইতেই দেখি বস্তা থিকা নানা রকমের যন্ত্রনা বাইর হইতে থাকে। আর এক্সপিতে ছোট ছোট সুবিধা ছিল ফাইল এক্সপ্লোরারে, সে সব সুবিধাও বিদায় করে দিসে। আর অন্যদিকে ব্যাপক হারে ড়্যাম খাইতেসে নিজের চাকচিক্য জাহির করার জন্যে। যখনই মাথা গরম হইত, তখনই মনে হইত মুইছা এক্সপি করি, তারপর কইতাম, থাক, আসল জিনিষ দিসে, এইটারে ফালায় ২ লম্বরি জিনিষ ভইরা কয়দিন শান্তিতে থাকুম?

২০০৭ এর মাঝামাঝি আর পারলাম না, ফরম্যাট কইরা এক্সপি করলাম, কিন্তু শালারা কত বড় বদমাইশ, কোন কিছুর ড্রাইভার পায় না। যেইটাই খুজি, কয়, তোমার কোম্পানিতে যাও, অর্থাৎ, এইচপি তে যাও, কিন্তু সেখানে বলে আমার ল্যাপির জন্যে ড্রাইভার শুধু আছে বস্তার জন্যে। আর গরমও যা হইত আমার ল্যাপি, মাঝে মাঝে মনে হইত, সামারা এর কোন ভাই বোন না হইলে এইচপির বিরুদ্ধে মামলা করুম। কাজেই ফিরা যাবার পথ বন্ধ, তাই আগের কম্পুতে ভুল কইরাও বস্তা করলাম না, দিনে দিনে বস্তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমা হইতে থাকল। এক দোস্ত কইল লিনাক্সের কথা, কিন্তু হে আরো কইল, গেম গুলান চালাইবার পারবি না, তাই সে পথেও যাইতে পারলাম না। বইয়া বইয়া আঙ্গুল কামরাই, বিল কাগুরে গাইলাই। এর মাজেহ মাথায় আইল, মনে হয় বস্তার অন্যান্য ভার্ষন গুলা বোধহয় ভালো। টরেন্ট কইরা সব নামাইলাম, ব্যবসা, আল্টিমেট, বেসিক আরো কত কিছু। একে একে সবগুলাই চালাইলাম, সবচেয়ে বেশি দিন আমার ল্যাপিতে ছিল মনে হয় বস্তা বেসিক। এইটাতে আবর্জনা সবচেয়ে কম। এর মাঝে এক্সপি লোডায় বইল সারভিস প্যাক ৩ আমার ডেস্কটপে। তারপর তো আমার মাথার চুল ছেড়া ছাড়া আর কিসু করার উপায় থাকল না। আওয়াজ আসে না, ওয়াই-ফাই কাম করে না, এজিপিও ঝামেলা করে। আমার এক আইটি দোস্তরে জিগাইলাম, ঘটনা কি? হে কইল, আবার কি, এইটা দিয়া সবাইরে যন্ত্রনা দেবার ব্যবস্থা, যাতে কইরা সবাই বাধ্য হয় বস্তার মাঝে মাথা ঢুকাইতে। আমি কি কম খাটাশ! ফরম্যাট মাইরা লাইভ আপডেট বন্ধ কইরা দিলাম। যাই আসে, কাটা চামচ দিয়া খোচায় দেখি, এইডা ভরা ঠিক হইব কিনা? তারপরে লোডাই। এইভাবে কতদিন, একদিন আমার পত্নীদেবী ভুল কইরা হ্যাঁ বইলা দিল, আর সেই ধনন্তরি এসপি-৩ ঢুইকা বইসা থাকল। বেচারি সহজ সরল মানুষ, এইটুকু জানে যে, আপডেট তো মানুষের ঝামেলা কমানোর আর কম্পুর উন্নতির জন্যেই বানানো। নাহলে কি দরকার, ২ দিন পরপর এসব সরবরাহ করার! এখন চিন্তা করতে গিয়া মাথায় একটা প্রশ্ন আইল, আসলেই, বিল কাগুরে জিগাইতে মন চায়, উনি আসলে কি চান? মানুষ শান্তিতে থাকুক, নাকি বেহুদা অশান্তিতে থাকুক, তারপর দেওয়ালে পিঠ ঠেকলে সাধারন মানুষ কাস্টমার সার্ভিসে কলাইবো আর তারা সার্ভিস দেবার নামে পয়সা লইব।

এইবার আর পারলাম না, বস্তা বেসিক ভরলাম ডেস্কটপে, তারপর দেখলাম, জানালা ৭ এর বেটা আইসে বাজারে, পুরানা অভিজ্ঞতা থিকা জানি, চকচক করলে সোনা হয় না, কাজেই ঐ পথেই পা বাড়াইলাম না। বস্তায় মাথা ভইরা দিন গুনতে লাগলাম, হয়ত কোন একদিন আসবে সেই সুদিন, যেদিন বিল কাগু ও-এস এর নামে ডিভিডিতে করে কাগু বেচবে না। কিন্তু বস্তায় মাল ভরলে সেটা যে কত ভারী হয় তা না ভরলে বুঝবেন কেমনে? এই ২০০৯ এ আইসা বস্তাও কুত পারতে শুরু করল। কম্পু বুটাইতে চায় না, ধীরে চলে, হ্যাঙ্গ করে, কিসু কপি পেস্ট মারতে গেলে কাপাকাপি করে, নেটওয়ার্কে ফাইল শেয়ার করতে গেলেও নানা যন্ত্রনা। এইদিকে ফরম্যাট মারতে পারতেসি না, বউ এর জিনিষ পত্র দিয়া ল্যাপি ভর্তি। আর লাইভ আপডেট তো আসতেছেই, বস্তা নতুন করে ভরার পর কম করেও ঘন্টা খানেক সে নেয় শুধু সময়ের সাথে তাল মিলাইতে। মহা বিরক্তিকর। আর আপডেট চলতে চলতে ভিড়িম করে সে রিস্টার্ট মারে, তারপর ভুলে যায় যে এ দুনিয়াতে আছে আমার কম্পু।

এর মাঝে ঘটল আরেক ঘটনা, আমার শালী ফোন করে জানাল যে, কালকে একটা ভৌতিক ঘটনা ঘটেছে, আমি বললাম, ধুর মাইয়া, দুনিয়াতে ভুত বইলা কিছু নাই। সে আমাকে বলে, না, আসলেই, কালকে রাত ৩টায় আমার কম্পু নিজে নিজে চালু হয়ে দৌড়ানো শুরু করসে, সে বেচারী একা থাকে, ভীষন ভয় পাইসে। আমি তারপর নিজের ল্যাপিতে খোচাখুচি করে বের করলাম, লাইভ আপডেট এর সময় রাত ৩টা, সারাদিন বন্ধ থাকলে সে রাত ৩টায় মাথা চাড়া দিয়া উঠবে সপ্তায় একদিন। আমি তো হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা হবার জোগার। তাকে কিছু বললাম না। পরের আবার যখন সে আমাকে জিজ্ঞাস করল, কিসু পাইসি কিনা, আমি বললাম, এই ঘটনা কি ঠিক ৩টায় ঘটসে নাকি ১-২ মিনিট আগে পড়ে? সে তো ঘাবড়ায় গেসে, বলে, কেন? আমিও কম বদ নাকি? আমি বললাম, না মানে, রাত ৩ টায় তো উইচিং আওয়ার। আসলে তা না, মাঝ রাতের পর যে কোন সময়ে এটা হইতে পারে। হালকা চাপা ঝাড়লাম, সেই বেচারী তো ভয়ে ব্যাটারি খুলে ল্যাপি ব্যাগে ভরে ঘুমাইতে লাগল। মাস খানেক পরে প্রজাপতি আমার গোমর ফাঁস করে দিল জানতে পেরে।

সচলে এর মাঝে জানতে পারলাম যে লিনাক্স বা উবুন্টু এখন অনেক আগায়া গেছে, কিন্তু তাও ভরসা পাইতেছিলাম না। আর গেম গুলাও আরেকটা কারন ছিল আমার পিছুটানের। একদিন টরেন্টে দেখলাম, জানালা ৭ আল্টিমেট, দেখে বিশ্বাস হইতে চাইল না। নামায়া রাখলাম, কিন্তু ভরলাম না। বিল কাগুর কাছ থিকা ভালো কিছু আইতে পারে, এটা বিশ্বাস করা সম্ভব না আমার পক্ষে। এভাবে কাজ চালাইতেছিলাম বস্তা দিয়া, ২খান কম্পুতেই বস্তা, চারদিকে বস্তা, বস্তাই বস্তা। এর মাজেহ শাহান আসল ঢাকা থেকে, এসে কিনল ডেল স্টুডিও, তারেও দিল ডেল বস্তা ধরাইয়া। সে বেচারাও আমার সাথে সুর মিলাইয়া গাল পাড়তে থাকল বস্তারে। ২ সপ্তাহ আগে আমার ল্যাপিতে বস্তার তলা ফাইটা গেল, কাজেই ভিতরের সব জিনিষ বাহির হইয়া আমারে বিয়াফক গিয়ান্জামে বাঝায়া দিল। নিরুপায় হইয়া আমি জানালা ৭ করলাম, এইটা করার পর থিকা বেশ ভালই আছি, এখন পর্যন্ত কোন ভেজাল করে নাই। হয়ত বিল কাগু রাস্তায় আসছে, বস্তার ১৪ বার কইরা অনুমতি চাইবার ব্যাপারটা দুর হইসে। আপনে কম্পুর অ্যাডমিন, তারপরেও যখন কয়, আপনার অনুমতি নাই, তখন কেমন লাগে মেজাজটা। এগুলা ছাড়াও ছোটখাট আরো অনেক জিনিষে ৭ অনেক ভাবে উন্নত। তবে যে ব্যাপারটা বলতে চাই, সেটা হল, হ্যাকার ভাইরা জিন্দাবাদ। আগের সবগুলা বাইর হইত আসল জিনিষ বাইর হইবার পরে, ৭ বাইর হইসে রিলিজ তারিখেরও ২ মাস আগে।

তবে, এত কথা বলার কারন হইল, শাহান মিয়ার দেওয়া উবুন্টু। সব কিছু মাগনা, চিন্তা করলেই যেন কেমন লাগে। চাইলে মাগনা মাগনা বাসায়ও পাঠায়া দেয়, ফলে শাহান মিয়া মনের আনন্দে বিলি বন্টন করতেছে, এক কপি আমার ভাগ্যেও জুটল। হাতে যখন অযাচিত ভাবে এসেই পড়ল, তখন শামিম ভাইয়ের লেখাগুলা মাথার মধ্যে খুটমুট শুরু করে দিল, ফলাফল খুবই সহজ, দিলাম, ঢুকায় রমে। সিডি কইল, ডেডিকেট করে ইন্সটল করতে চাইলে বুট কর, আমি কইলাম, ঠিকাছে। দিলাম বুট কইরা। ইন্সটল করলাম, তারপর নিজে নিজে সব খুইজা নিল, একবারও কইল না, ঐ সফদার, ডেরাইবার পাই না তো। ঢুকানির সময় মনে হয় কিসু ভুলভাল টিপসিলাম, তাই হার্ড ড্রাইভে পার্টিশন নিয়া হালকা পাতলা ঘাপলা হইল। কিন্তু সেই ৯৫ থিকা বিল কাগুর লগে যুদ্ধ কইরা আইতাসি, এত অল্পে ডরাই নাকি আমি? পুরাপুরি শুরু থিকা যাত্রা শুরু করলাম, ফরম্যাট কইরা ফালাইলাম, জানালা ৭ তারপর উবুন্টু ৯.০৪. এক অভুতপুর্ব জিনিষ এই উবুন্টু। ২ দিন ধইরা এইটা নিয়া খুন্টুমুন্টু করলাম। তারপর খবর পাইলাম, অভ্রও আছে উবুন্টুর জন্যে, আর কে পায় আমারে। ফোরামে অভ্র ভরিবার তরিকা দেইখা ডরাইছিলাম একটু, কি কয় টার্মিনালে যাও, এইডা লেখ, ঐটা পড়, একটু ভয়ে ভয়ে করলাম, তারপরে হর হর করে কি কি সব কইল। আমি পাত্তা দিলাম না। লগ আউট করলাম, তারপর আবার লগ ইন করলাম, দেখি এক কান্চি দিয়া কিবোর্ডের আইকন উঁকি দিতাছে। একটা ক্লিক মারতেই তুমুল বেগে বাঙলা লেখা বাইর হইতে লাগল। এর জন্যে মেহেদি ভাইরে আবার একবার ধন্যবাদ দিতে চাই। সাইফুর রহমান বাংলা কইতে পারে না, তারে কিনা দেওয়া হয় একুশে পদক, আমার হিসাবে এই পদক প্রতি বছর দেওয়া উচিত মেহেদি ভাইরে।

উবুন্টু বুট হবার পর ৫ মিনিট লাগল ৮৪ টা জিনিষ আপডেট হইতে, কোন প্রোগ্রাম ভরতে চাইলেও তা ১-২ মিনিটের মাজেহই সমাধা হয়, বেহুদা, করবার পারবা, না, এদিক তাকাইবা না, তার লগে কথা কইবা না মার্কা কোন কথা কইল না। বুট হইতে সময় লাগে ৩০ সেকেন্ড, শীত নিদ্রায় যাইতে সময় লাগে ১৫ সেকেন্ড। উবুন্টুর গুনাবলি লেখার দরকার নাই, সেইটা শামিম ভাই বহুত বার কইসেন, কাজেই বস্তা বা জানালার ঝিক মিক দেইখা ভাই বোনেরা ধরা খাইয়েন না। আর উবুন্টু বুট করা মাত্র দৌড়ায়, বস্তা বা জানালার মত চালু হবার পর "আমাদের দেশের বড় কর্তার মত বিশেষ কামে ব্যস্ত আছি" মার্কা কথা কয় না। যেই মাত্র স্ক্রিন আইল, তখন থিকা রেডি আগুনে ঝাপায়া পড়ার লাইগা। বিল কাগুর জানালাগুলা সস্তা বারবণিতার সস্তা হাসির মতনই, পয়সা দিয়া কিনেন বা চোরাই কইরা উপভোগ করেন না কেন, দিন শেষে তারা আপনারে অসুস্থ করবেই। কাজেই সবাই পণ করেন, আইজ থিকা সবাই উবুন্টু ব্যবহার করবেন, সেই সাথে সবার আগে অভ্র লোডাইবেন, অভ্রের মত দারুন "নরমতার" মনে হয় না কাছাকাছি সময়ে বাইর হইসে!! তাছাড়া শুনলাম অভ্রের নতুন সংখ্যা আসিতেছে। আর চলেন সবাই বিল কাগুরে গিয়া কই, কম তো জানালা বাইর করলেন না, পয়সাও কম নিলেন না। লাভ কি হইল, ভালো কিসুই তো দিবার পারলেন না। কাজেই আমার কইতে মন চায়, "সব কটা জানালা ফেলে দাও না, আমি গাইব গাইব উবুন্টুরই গান"

পরমাণুগল্পঃ ডাগদরসাব

জনৈক ব্যক্তি একবার হাত কাটিয়া ফেলিলেন গ্যারাজ সাফ করিবার সময়, ব্যাপক হারে রক্তক্ষরন হইতে লাগিল, তিনি কি করিবেন বুঝিতে পারিতেছিলেন না। হঠাৎ করিয়া তাহার মনে পড়িল যে, তাহার ২ বাড়ি পরে এক ডাক্তার সাহেব থাকেন, এখন হয়ত তিনি বাসায় নাই, তারপরেও তিনি ভাবিলেন, যাইয়া দেখি, তিনি হয়ত বাসায় থাকিতেও পারেন। যেই না ভাবা, সেই না কাজ, তিনি সেখানে আসিয়া পরিলেন, আসিয়া কড়া নাড়িতেই ডাক্তার সাহেবের ৩ বছরের কন্যা আসিয়া দরজা খুলিয়া দিল। তাহার পরে সেই ছোট্ট বালিকা কি বুঝিল বিধাতাই জানেন, এতটুকু বাচ্চার কি বা বুঝার আছে, কিন্তু, সেই দেবশিশু তাহার কাটা হাত আর রক্ত দেখিয়া তাহাকে টানিয়া নিয়া একখানা আরাম কেদারায় বসাইয়া দিল, তারপর দৌড় দিয়া কাবার্ড হইতে তুলা নিয়া আসিয়া চাপিয়া ধরিল, তারপর উলটা তাহার কোলে উঠিয়া গল্প জুড়িয়া দিল।

সেই দেবশিশু নানা ভাবে ইনাইয়া বিনাইয়া তাহার গল্প বলিতে লাগিল, সে প্রতিদিন কি করে, তাহার কয়খানা পুতুল, কোন পুতুলের কি নাম, তার কোন পুতুল তাহার সাথে কি রঙ তামাশা করে। কোন পুতুল দিয়া সে কি খেলা করিয়া থাকে, কাহার কোন আচরণ তাহার ভালো লাগে না। তাহার মা কেমন ভাবে তাহাকে বকিয়া থাকে, ডে-কেয়ারে গিয়া সে কাহার সহিত কি দুষ্টুমি করে, এইসব বলিতে বলিতে প্রায় ঘণ্টা খানেক পার হইয়া গেল, এর মাঝে গল্প প্রসঙ্গে তাহার বাবার কথা আসিলে জনৈক ব্যাক্তির মনে পড়িল তিনি কেন এখানে আসিয়াছেন। কিন্তু এই দেবশিশুর আপ্যায়নে আর সেবায় তিনি সকল জ্বালা যন্ত্রণা ভুলিয়া গিয়াছিলেন। মনে পড়িয়া যাওয়ায় তিনি শিশুটিকে বলিলেন, তোমার বাবাকে একটু ডাকবে? সে বলল, বাবা তো বাসায় ই আছেন, আমি ডেকে আনছি। ডাক্তার সাহেব, এসে দেখলেন, এই বেচারার হাত দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে তখনো রক্ত পড়ছে, তবে খুবই ধীর গতিতে। তিনি আর তুলা সরাইলেন না, তাহাকে সরাসরি বলিলেন হাসপাতালে চলিয়া যাইতে। তিনি উপায়ান্তর না দেখিয়া ট্যাক্সি ডাকিয়া চলিয়া গেলেন হাসপাতাল।
doctor_funny

হাসপাতাল গেলে তাহার হাত সেলাই করা লাগিল, নানা রকমের ওষুধ পাতি দিয়া তাহাকে কর্তব্যরত ডাক্তার তাহাকে বাড়ি পাঠাইয়া দিলেন। পরের সপ্তাহে যখন তার ব্যথা বেদনা আর নাই, তিনি গিয়া হাজির হইলেন সেই ডাক্তার সাহেবের বাসায়, আবার কড়া নাড়িলেন, এইবার ডাক্তার ব্যাটাই দরজা খুলিয়া দিল, কিন্তু তাহাকে দেখিয়া জনৈক ব্যক্তির ভ্রূ কুঞ্চিত হইয়া গেল। ডাক্তার ব্যাটা ভাবিল, তাহাকে ধন্যবাদ জানাইতে আসিয়াছে মনে হয়, এই প্রতিবেশী। কিন্তু তিনি তাহাকে অবাক্‌ করিয়া দিয়া তিনি বলিলেন, আপনার কন্যা কই? তাহাকে ধন্যবাদ দিতে আসিলাম। এইবার তো ডাক্তার ব্যাটার অবাক্‌ হইবার পালা, কিন্তু, তিনি তাহাকে অবাক্‌ করিয়া বলিলেন, যার কাছ থিকা প্রকৃত সেবা পাইয়াছি, সেই তো আমার ডাক্তার, তাহাকেই ধন্যবাদ জানাইতে আসিয়াছি।

funny-doctor-cartoons-03-ss

doctor-funny