মাঝে মাঝে ভাবি গরু হয়ে জন্মালে এত কষ্ট করা লাগতো না, যখন ইচ্ছা ছেড়ে দিতে পাড়তাম যেখানে খুশি। কেন যে আমি সব উড়াধুরা জিনিষ নিয়া লিখি, আমি নিজেই জানি না। তারমধ্যে বানান পারি না একটুও, সবাই শতকের উপরে স্কোর করবে আমার লেখা থেকে, কিন্তু না লেখা পর্যন্ত আমার চুলকানি তো থামবে না। নাম থেকেই বুঝতে পারতেছেন, যেই পড়বেন কপালে খারাবী আছে। দুর্গন্ধ আর হাগামুতার ছড়াছরি হবে, চরম, তাই আগে থেকেই সাবধান করে দিলাম, পরে কইয়েন না, বেডা আগে কইবার পারস্ নাই?
ঘটনার শুরু আমার শৈশবে, তখনও লজ্জা শরম কিছু ছিল, আসলে কিছু না, একটু বেশীই ছিল, যার ফলে অনেক বিভ্রাটের সৃস্টি হয়েছিল তখন থেকেই। আমার বয়স তখন ৫ বছর, আমার আম্মা আমাকে তার ২ ছাত্রীর সাথে আমাকে বসায় দিয়ে কাজ করতে ব্যস্ত, আমার তো ট্যান্কি ফুল, ফাটে ফাটে অবস্থা, এর মদ্ধে যে ২ জন আমার সামনে বসে আছেন, তারা ২ জনই খুব সুন্দরী, কিন্তু লজ্জাবসত আমি বলতে পারতেসি না, আমার তো "ফাইট্টা যায়" অবস্থা। এইভাবে ঘন্টাখানেক গত হইছে, হঠাত তারা বলে উঠেন যে, ম্যাডামের তো সময় লাগবে আরো, চল আমরা বাইরে যাই, আমি আর কি বলব্, আমার তো জান যায় যায় প্রায়। তাও কিসু বলতে পারি না, এভাবে বের হই উনাদের সাথে। পাঠকগন (যেই অভাগা অথবা অভাগী এই লেখা পড়তেছেন) বুঝতেই পারতেসেন, আলুর সমস্যা তখনই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে ওই বয়সেই। বের হয়ে রিকশায় উঠে বসেছি উনাদের ১ জনের কোলে। তখন তো অবস্থা আরো সিরিয়াস। ১০ মিনিটের মাথায় আমরা একটা মার্কেটে এসে পৌচাই, তারপর নামতে না নামতেই আমার কনট্রলের বাইরে চলে গেল সব, ছরছর করে শব্দ আর তার পেছনে হাইমাউ করে কান্না, ২ সুন্দরীর সামনে প্যান্টে পেশাব করার লজ্জায় আমি নীল থেকে কালো হবার অবস্থা ... ... ....
এইভাবে আমার ছোটঘর বিভ্রাটের শুরু। যদি বলতে পারতাম, এটাই শেষ, আর এই ভুল হবে না, তাহলে তা আমার জন্য বড়ই আনন্দের বেপার হত। কিন্তু বিধিবাম, এই নেড়া যে বেল তলার (অথবা বাল তলায়) নি্যমিত যাত্রী। যাক, ছোটবড় এরকম আরো কুকর্ম করতে করতে আমি বড় হই। যখন আমার বয়স ১১, তখন পরিবারের সাথে যাই সিলেট, থাকতাম রাজশাহী, বাসে করে ঢাকা, তারপর ট্রেনে করে সিলেট, পথে দেখা হল আমার বাবার সাথে তাঁর এক রুগীর সাথে, কথায় কথায় তিনি জানতে পারলেন যে, আমরা ঘুরতে যাচ্ছি সিলেট এবং আশেপাশে। উনি বললেন, ঠিক আছে, আপনার গাড়ী ভাড়া করার দরকার নেই, আমার মাইক্রোবাস আছে, ঐটা নিয়ে যান, পুরো পরোবার নিয়ে ঘুরতে যাওয়ার জন্য এরচেয়ে ভালো আর কি হতে পারে? বিধাতা নিশ্টই খুব হেসেছিলেন, কি ঘটতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে তা ভেবে। আমার বাপজান যদি ঘুনাক্ষরেও জানতো আমি কি করতে যাচ্ছি, উনি মনে হয় ট্রেন থেকেও নামতো না।
যাক, যা হওয়ার তা তো হবেই, ঠেকায় কে? আমরা উঠলাম এক ভদ্রলোকের বাসায়, উনি আবার আমার পিতার শিক্ষক মতন হয়। উনার বাসায় খেয়ে আমার পেটে কেমন যেন 'গিয়ান্জাম' হয়ে গেল। পরদিন আমাদের বের হবার কথা, আমি ভাবলাম, সকালের আগে নিশ্চয় পেট 'টাইট' হয়ে যাবে। কিন্তু কপালের লিখন খন্ডায় কে? সকালে উঠে আমার মনে হল সব ঠিক, তাই আমিও আর আম্মাকে কিছু বলি না। যথাসময়ে গাড়ি এসে হাজির। বড় মিনিভ্যান, তাই উৎসাহের সাথে আমার বাবা ঐ চাচার ২ ছেলে এবং ভাগনিকেও নিয়ে নেন, তারা যেহেতু সব চিনে, আমাদের গাইড করবে আরকি। আমরা হরিপুরের দিকে রওনা হই ৯টার দিকে, মাঝরাস্তা আসতেই পেটের ভেতরে কেমন যেন ডাকাডাকি শুরু হয়ে গেল। আমি ভাবলাম, এই তো সামনে হরিপুর গ্যাসফিল্ড, ঐখানে নিশ্চয় টয়লেট থাকবে। পৌছে আমি আর টয়লেট খুজে পাই না, কেমন লাজুক, বুঝেন, কাউকে কিছু বলি না লজ্জায়, যে পেট খারাপের মত হয়েছে, ছিপি আটকে বসে থাকি। ঘন্টাখানেক পর আমরা আবার রওনা দেই, জাফলং যাবো বলে। এবার তো অবস্থা সিরিয়াস, কেমন যেন টকটক ঝাল ঝাল বোধ হতে ঠাকে বিশেষ জায়গায়। আমার ধারনা ছিল অল্প সময়ে আমরা পৌছে যাবো, কিন্তু অপেক্ষার সময় লম্বা হয়, তা তো সবাই যানেন। যখন আর অল্প দুরত্ব বাকি, আমি বলতে বাধ্য হই আব্বাকে, আর পারতেসি না, পরে গেল বলে, ঝোল গড়ায় পড়ার অবস্থা। আব্বার তো মুখ পুরা অন্ধকার, বলে, দেখি খোজ করে, উনি ড্রাইভারকে বললেন, কাছে কোথাও গ্রাম আছে কিনা, যেখানে এখুনি যাওয়া সম্ভব। পরের সাইড রাস্তায় ঐ মিয়া গাড়ী ঢুকায় দেয়। আমার ততক্ষনে 'মেঘে আকাশের ঘনঘটা' টাইপ অবস্থা। এইদিকে আমি ভয়ে বায়ুও ছাড়ি না, যদি ঝোলও বের হয়ে যায়?
কিন্ত আর শেষ রক্ষা হয়না, গাড়ী কোন স্থানে পৌছানোর আগেই আমার কেমন একটা চুকা ঢেকুর উঠে অন্য মুখ দিয়ে, তারপরেই ঝোলের গড়াগড়ি। আমার বাপতো আমাকে তখনই লাথি দিয়ে নামায় দেয় পারলে। ১০ মিনিট পর একটা গ্রামের বাজারে পৌছাই, আব্বা নেমে যায়, যদি একটা লুন্গি পাওয়া যায়, প্যান্টের তো অবস্থা নাই পরে থাকার মত। যাক উনি একটা লুন্গি আর একটা হাফ প্যান্ট নিয়ে ফিরেন। আমাকে আম্মা উঠে দারাতে বলেন, উনারা আসলে বুঝতে পারেন নাই, কতখানি ঝোলের উপর আমি বসে ছিলাম, উঠে দাড়ানো মাত্র হিপ থেকে সড়সড় করে গড়াতে থাকে ঝোল, একদম এক পা বেয়ে ফ্লোর মাখামাখি। সিট টো আগেই বরবাদ, তখন গাড়ীও বরবাদ। ততক্ষনে আমার বাবা মা ২ জনেই সমান তাখে আমাকে বকতেছেন ;)। আমাকে দাড় করানো হয় এক মেয়েদের স্কুলের মাঠে, রাস্তাদিয়ে সবাই যাচ্ছে আর আমাকে দেখতেছে ১১ বছরের একটা ছেলে নেংটা হয়ে মাঠে দাড়ায় আসে ... .... ...
সেই থেকে পণ করেছি, আর লজ্জা করব না, ছোট সাহেব বা বড় সাহেব যেই ডাক দিক্ না কেন, সাথে সাথে সাড়া দিব। কিন্তু ঢেকি স্বর্গে গিয়াও ধানই ভানে, আমার কি আর বিভ্রাট শেষ হবে?
জোশ হয়েছে বস--হা হা হা
ReplyDeleteতোমার 'দূর্ভাগ্যে' আমার হাসাটা ঠিক হচ্ছে না--কিন্তু এইরকম একটা ঘটনা--না হেসে উপায় আছে??
ভাল কথা, তোমার pop psychology' এর উপর যে লেখাটা দেবার কথা---সেটা কদ্দুর???
না বস, সাধারন সাইকোলজি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের পথচলায় কিভাবে আমাদের চালিত করে, সাহায্য করে না বাধার সৃষ্টি করে, তাই নিয়ে লিখবো। আসলে কি আপনার ভালো লাগলো নাকি উত্ সাহ দেবার জন্য ভালো বলতেছেন কে জানে, কিন্তু শুনতে আমার ঠালো লাগতেসে। হে হে হে
ReplyDelete